অটবি পড়ার টেবিল
শিশু স্কুলে যাওয়ার আগে থেকেই ওকে পড়ার টেবিলমুখী করানো মা-বাবার দায়িত্ব। অল্প বয়সেই শিশুকে পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়ানোর পরিবেশ গড়ে দিন। শিশুর সুন্দর স্কুলব্যাগ, আরামদায়ক ঘর ও আকর্ষণীয় পড়ার টেবিল পড়াশোনার প্রতি বাড়তি আগ্রহ তৈরি করে। অনেক মা-বাবা বিছানা, মেঝে অথবা বারান্দায় সন্তানকে পড়াতে বসেন।
শিশুর পড়াশোনায় ভিন্নতা আনতে এটা করতে পারেন। তবে চেষ্টা করুন শিশুকে টেবিলমুখী করাতে। বিছানায়, মেঝেতে শরীর এলিয়ে পড়াশোনার চেয়ে চেয়ার-টেবিলে বসে পড়াশোনা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এতে শিশুর মেরুদণ্ডের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। বিছানায় বসে পড়াশোনায় অনেক সময় শিশু ঘুমিয়ে যায়। আবার সহজেই ভিন্ন দিকে মনোযোগ ঘুরে যায়। এ জন্য শিশুকে টেবিল-চেয়ারে পড়তে বসতে উত্সাহী করুন। এখন করোনার সময় স্কুল বন্ধ। কিন্তু পড়াশোনা তো আর থেমে নেই। অনলাইনে ক্লাসের পড়াশোনা করতে হচ্ছে ঘরে বসেই। স্কুলে যে সময়টুকু বেঞ্চে বসে পড়ত তা করতে হচ্ছে বাড়িতে। এ জন্য এমন আকর্ষণীয় টেবিল বেছে নিন যাতে ওরা নিজ থেকে সেখানে বসে অনলাইনে ক্লাসসহ দীর্ঘ সময় পড়াশোনা করতে পারে।
২০২২ বিশ্বকাপের সূচি
আকর্ষণীয় ডিজাইন বেছে নিন
শিশুরা সব সময়ই রঙিন জিনিসের প্রতি বাড়তি মনোযোগী হয়। শিশুর টেবিল কেনার সময় চটকদার টেবিল বেছে নিন। বাজারে হরেক রকম শিশুতোষ টেবিল কিনতে পাওয়া যায়। এগুলোর কোনো কোনোটায় বাংলা ও ইংরেজি বর্ণমালা, গাণিতিক সংখ্যা, যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ, নামতা, বিভিন্ন পশু-পাখি, ফুল, মাছ ইত্যাদি চিত্রসংবলিত থাকে। এই ধরনের টেবিল শিশুদেরও বেশি পছন্দ। ওদের জন্য এমন ডিজাইনের টেবিল কিনে দিতে পারেন। এতে টেবিলে বসে শিশুর পড়াশোনার প্রতি বেশি আগ্রহ তৈরি হবে। বইয়ের পাশাপাশি টেবিলে আঁকা বিষয়গুলো থেকেও নানা কিছু নিজে নিজে শিখতে পারবে।
কিনতে পারেন ফোল্ডিং টেবিল
শিশুরা এক জায়গায় দীর্ঘক্ষণ মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না। এ ছাড়া একই জায়গায় অনেক দিন বসে পড়তে পড়তে ওদের মধ্যে একঘেয়েমি চলে আসতে পারে। এ জন্য শিশুর পড়ার স্থান পরিবর্তন করে দিতে পারেন। ছুটির দিনে ছাদে বা বাসার ব্যালকনিতে ওর টেবিল সেট করে দিন। সেখানে বসে পড়াশোনা করতে বলুন। শীতের দিনে বাসার বারান্দায় যেখানে রোদ পড়ে সেখানেও টেবিল পেতে দিতে পারেন। আরামে পড়ার পাশাপাশি ওর মধ্যে নতুনত্বের ছোঁয়া লাগবে। এটা ওকে পড়াশোনায় বাড়তি মনোযোগী করবে। এ জন্য ফোল্ডিং টেবিল ব্যবহার করুন। এটা সহজেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বহন করা যায়। আবার কিছু মাল্টি টাস্কিং টেবিলও কিনতে পাবেন বাজারে। এ ধরনের টেবিলে বই, খাতা, পেনসিল, রাবার, জ্যামিতি বক্স, স্কুলব্যাগসহ পড়াশোনার প্রয়োজনীয় নানা জিনিস রাখার জন্য আলাদা র্যাক ও বক্স থাকে। এই ধরনের টেবিল হলে পড়তে বসলে এটা-ওটা নেওয়ার জন্য বারবার উঠবোস করতে হয় না। এতে পড়াশোনায় মনোযোগ অটুট থাকে।
ওয়ান প্লাস মোবাইল প্রাইস ইন বাংলাদেশ
বানিয়ে দিতে পারেন আরামদায়ক টেবিল
শিশুর উচ্চতার সঙ্গে মিল রেখে কাঠ অথবা পারটেক্স দিয়ে টেবিল বানিয়ে দিতে পারেন। কাঠের টেবিল বানাতে মিস্ত্রির কাছে যেতে হবে। তবে পারটেক্সে তৈরি বাহারি টেবিল দোকানে অর্ডার করলে এক দিনের মধ্যেই ডিজাইনমতো বানিয়ে দেবে। এ রকম অর্ডার দিয়ে বানালে এক দিকে সামান্য ঢালু টেবিল বানিয়ে দিতে পারেন। এতে খাতা রেখে লেখা ও পড়াশোনা সমতল টেবিলের চেয়ে তুলনামূলক আরামদায়ক। টেবিলের পাঠাতনের নিচে ড্রয়ারের ব্যবস্থা রাখুন। এতে অনেক জিনিস রাখা যাবে। ফলে টেবিলের ওপরের জায়গা ফাঁকা, সুন্দর ও গোছানো থাকবে। এমন টেবিল কিনুন বা বানিয়ে দিন যেটা সহজে পরিষ্কার করা যায়।
আরামদায়ক চেয়ারও চাই
শিশুর সুন্দর ও আকর্ষণীয় টেবিলের সঙ্গে সঙ্গে আরামদায়ক চেয়ার খুব গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখবেন, বড়দের চেয়ার আর ছোটদের চেয়ার কিন্তু এক নয়। অনেক বাসাতেই বড়দের চেয়ারে বসে বড়দের জন্য উপযুক্ত টেবিলে শিশুরা বসে পড়াশোনা করে। এ রকম চেয়ার-টেবিলে বসে পড়তে ও লিখতে ওদের ভারি অসুবিধা হয়। এটা শিশুর শরীরের জন্যও উপযুক্ত নয়। এ জন্য শিশুর বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী আরামদায়ক চেয়ারের ব্যবস্থা করুন। বাজারে শিশুদের বয়স ও উচ্চতা ভেদে নানা রকম চেয়ার কিনতে পাওয়া যায়। চাইলে শিশুর জন্য আরামদায়ক চেয়ার বানিয়েও নিতে পারেন। বাজারের শিশুদের পড়ার টেবিলের সঙ্গে ম্যাচিং চেয়ারও পাওয়া যায়। এ রকম চেয়ার-টেবিল সেট কিনে দিতে পারেন। শিশুর বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সমন্বয় করে এক বা দুই বছর পর পর ওর চেয়ার-টেবিল বদলে দিন।
কোথায় পাবেন, কেমন দাম
ছোট-বড় সব ধরনের ফার্নিচার শোরুমে শিশুদের উপযোগী টেবিল কিনতে পাবেন। এ ছাড়া আরএফএল, বেঙ্গল, তাজসহ বেশ কিছু কম্পানির নান্দনিক ডিজাইনের প্লাস্টিকের টেবিল পাওয়া যাবে। এ ছাড়া অনলাইনেও পাওয়া যাবে রংবেরঙের শিশুতোষ টেবিল-চেয়ার। দাম পড়বে ৫৫০ থেকে ৩৫০০ টাকা।