অপারেশন সার্চলাইট কি?
অপারেশন সার্চলাইট কি?
অপারেশন সার্চলাইট কি? আমরা এখনো এটাই জানি না। আর তার জন্য আমরা আপনাদের কাছে এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি নিয়ে হাজির হয়েছি। তবে এ আর্টিকেল সম্পর্কে বলার আগে বলব যে, আমরা বাঙালি জাতি এবং বাংলাদেশের সকল ইতিহাস আমাদের জানা একান্ত কর্তব্য। কারণ এই ইতিহাস আমাদের গৌরব।
বাঁশের উপকারিতা
সুতরাং আপনারা যারা অপারেশন সার্চলাইট সম্পর্কে জানতে চান তাদের জন্য আমরা সম্পূর্ণ বিস্তারিতভাবে তথ্য নিয়ে এসেছি। যেখানে আপনারা অপারেশন সার্চলাইট কি? এবং অপারেশন সার্চলাইটের অন্যান্য তথ্য জানাবো। চলুন তাহলে শুরু করি আমাদের আজকের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অপারেশন সার্চলাইট কি?
অপারেশন সার্চলাইট কি? | অপারেশন সার্চলাইট কাকে বলে?
অপারেশন সার্চলাইট হচ্ছে একটি ইংরেজী শব্দ। তবে অপারেশন সার্চলাইটের ঘটনাটি প্রত্যেক বাঙালির মনে এখনো জাগ্রত হয়ে আছে। কারণ এই ঘটনাটি কখনো বাঙালিরা ভুলতে পারবেনা এবং শহীদের আত্মত্যাগ কখনো ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে যাবে না।
১৯৭১ সালে ২৫শে মার্চ কাল রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পরিকল্পিতভাবে ঘুমন্ত বাঙালির উপর নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায় এবং তারা পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা করে, সেই সময় মার্চ মাসের পূর্ববর্তী সময়ের ঘটনাবলী জন্য বাঙালিকে দমন করার উদ্দেশ্যে এই হত্যাযজ্ঞ চালায়। আর এই হত্যাযজ্ঞকে অপারেশন সার্চলাইট বলা হয়।
অর্থাৎ পাকিস্তানের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য আন্দোলনকারীরা অর্থাৎ বাঙালিরা যে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং অভিযান পরিচালনা করে তাকে সামরিক কর্তৃপক্ষ অপারেশন সার্চলাইট নামে অভিহিত করেছে।
Google News Flow Now
অপারেশন সার্চলাইট পটভূমি
১৯৭১ সালের 25 শে মার্চ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীরা বাঙালির ওপর নির্মম অত্যাচার সংগঠিত করে এবং সেই আন্দোলনে পাকিস্তানের স্বৈরাচারী শাসক বাঙ্গালীদের কে নির্মমভাবে হত্যা করে। আর এই আন্দোলন কারীদের বিরুদ্ধে বাঙালি আন্দোলনকারীরা মুক্তিকামী বাঙালির কঠোর হস্তে দমনের জন্য যে ব্যবস্থা গ্রহন করে তাকে অপারেশন সার্চলাইট হিসেবে বলা হয়।
আর অপারেশন সার্চলাইটের উদ্দেশ্য ছিল ঢাকাসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রধান সড়কগুলো বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা এবং ছাত্র নেতৃবৃন্দ সহ বাঙালির বুদ্ধিজীবীদের গ্রেফতার ও প্রয়োজনে হত্যা করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থান পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের নিয়ন্ত্রণ করো, অস্ত্রাগার এবং বিভিন্ন রেডিও ও টেলিভিশন স্টেশন দখল করে।
তাছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলন কঠোর হস্তে দমন করার উদ্দেশ্যে পাকিস্তানের সরকার অর্থাৎ পশ্চিম পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। 25 শে মার্চ রাত 11:30 থেকে শুরু করে মধ্যরাত পর্যন্ত বড় বড় শহরগুলোতে অভিযান চালায় আরে সকল অভিযান অপারেশন সার্চলাইট এর আওতাভুক্ত।
হারানো সিম বন্ধ করার নিয়ম
তবে অপারেশন সার্চলাইটের অভিযান শুরু হয় একদম নির্ধারিত সময় ছিল 26 শে মার্চ রাত ১টা। তবে যখন 25 শে মার্চের সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে বৈঠকের পর যখন কোনো ইতিবাচক ফলাফল পেলোনা তখন সংগ্রামের জন্য তৈরি হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। অতঃপর সেই রাতে তারা ঢাকার বিভিন্ন স্থানে মুক্তিকামী বাঙালির প্রতিরোধ বাহিনী তৈরি করেছিল।
কিন্তু লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান এবং এ.এ.কে নিয়াজী জনসংযোগ কর্মকর্তা মেজর সিদ্দিক খান একত্রে মন্তব্য করেছিলেন যে বাঙালি বিদ্রোহীর প্রবল বৃষ্টির আগেই পাকিস্তান বাহিনীর ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু করা হয়।
অন্যদিকে পাকিস্তান বাহিনীর ১৪ ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা এবং 57 ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী খান একটি সামরিক অভিযানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত পৌঁছে এবং সামরিক অভিযান কি নামে অভিহিত করা হয় ১৯৭১ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি। এর পর 17 ই মার্চ চিফ অফ স্টাফ জেনারেল আব্দুল হামিদ খান এর নির্দেশে জেনারেল রাজা এর পরদিন ঢাকা সেনানিবাসের জিওসি অফিসের মধ্যে অপারেশন সার্চলাইট এর চূড়ান্ত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন।
আর অপারেশন সার্চলাইটের পরিকল্পনাকারী একটি পরিকল্পনা যা রাও ফরমান আলী নিজ হাতে লিখেছেন। এরপর সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে চব্বিশে মার্চ এবং 25 জেনারেল হামিদ, কর্নেল সাদ উল্লাহ, জেনারেল এ এবং মিঠঠি হেলিকপ্টারে করে বিভিন্ন নিবাসে প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি পরিদর্শন করেন। এবং সেই সময় সিদ্ধান্ত হয় ঢাকার নেতৃত্ব দিবেন জেনারেল রাও ফরমান আলী এবং জেনারেল খাদিম রাজা অন্যান্য অঞ্চল বা এলাকা নেতৃত্ব দিবেন।
তাছাড়া এই অভিযানকে সফল করার জন্য ইতিমধ্যে জেনারেল ইয়াহিয়া খানের দুজন ঘনিষ্ঠ অফিসার মেজর জেনারেল ইফতেখার জানজুয়া ও মেজর জেনারেল এ অমিত থেকে ঢাকার নিয়ে আসেন। এরপর পাকিস্তানী সৈন্যরা 25 শে মার্চ 11:30 সেনানিবাস থেকে বেরিয়ে এসে ফার্মগেট মিছিলরত বাঙালিদের ওপর ব্যাপক হারে গণহত্যা চালিয়ে অপারেশন সার্চলাইট এর সূচনা ঘটায়।
এরপর তাদের পরিকল্পনা অনুসারে একযোগে পিলখানা, রাজার বাগ আক্রমণ করে এবং দেড়টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার নিজ নিবাস থেকে গ্রেফতার করেন। তাছাড়াও তারা গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ইকবাল হল, জগন্নাথ হল এবং রেডমি ১০ সি দাম কত সহকারে বেশ কয়েকটি শিক্ষকদের আবাসিক এলাকা আক্রমণ চালিয়ে 9 জন শিক্ষক দহ বহু ছাত্রকে হত্যা করেছে।
তারা এসব করে শান্ত হয়নি ঢাকা জেলার সকল গুরুত্বপূর্ণ এলাকা সমূহ যেমনঃ মিরপুর রোড, ইন্দিরা, তেজগা,, ধানমন্ডি, পুরান ঢাকাম, বিমানবন্দর এলাকা এবং মোহাম্মদপুর এলাকায় আক্রমণ চালিয়েছে/ কিন্তু তারা এতেও ক্ষান্ত না হয়ে উল্টো ক্ষিপ্ত হয়ে টাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল গুলোতে বিভিন্ন ভাবে এবং ভয়ঙ্কর রূপে আক্রমণ চালিয়েছে।
আপনাদের একটি বিষয় পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন কারণ এটি যদি
পরিষ্কারভাবে না জানেন তাহলে অপারেশন সার্চলাইটের মানে ভিন্ন হয়ে যায়। তাই গণহত্যা হিসাব কঠিন। সুতরাং এভাবে 25 শে মার্চের কালো রাতের জন্ম হয় এবং সেই রাত্রি এখনো সকল বাঙালিদের কাছে ভয়ঙ্কর এবং অত্যন্ত দুঃখজনক একটি রাত।