গোসলের ফরজ কয়টি
- ১. একবার গড়গড়া সহ কুলি করা।
- ১. নাকের নরম জায়গা পর্যন্ত পানি পোঁছানো এবং পরিষ্কার করা।
- ৩. সমস্ত শরীর উত্তম রূপে ধৌত করা ( কোন অংশ যেন শুকনো না থাকে)।
গোসল কাকে বলে ?
পরিভাষায় আপাদমস্তক পুরো শরীর ধৌত করাকে গোসল বলা হয়। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা বলেন, “যদি তোমরা অপবিত্র থাকো, তবে বিশেষভাবে পবিত্র হবে। (সূরা মায়িদাহ : ৬)।
গোসলের ফরজ সমূহ হলো-
গোসলের ফরজ তিনটি। যথা,
- ১.ভালোভাবে কুলি করা।
- ২. নাকের ভিতরে পানি দেওয়া।
- ৩. পুরো শরীর ধৌত করা।
- ১. ভালোভাবে কুলি করা : গোসলের প্রথম ফরজ হলো গরগড়া সহ কুলি করা। মুখের ভেতর অনেক সময় খাবারের উচ্ছিষ্ট জমে থাকে, গলার ভেতরেও কফ জমে থাকে, তাই গরগরাসহ কুলি করলে গলার কফ ও মুখের ভেতর জমে থাকা খাবারের উচ্ছিষ্ট দূর হয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও ফরজ গোসলের অংশ হিসাবে কুলি করেছেন। (সহীহ বুখারী : ২৫৭ ও ২৬৫)
- ২. নাকের ভিতরে পানি দেওয়া : আরেকটি গোসলের ফরজ হচ্ছে নাকের ভেতর পানি দেওয়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও নাকে পানি দিয়েছেন। এই সম্পর্কিত একাধিক হাদীস বর্ণিত রয়েছে। (সহীহ বুখারী : ২৬৫)
- ৩. পুরো শরীর ধৌত করা : এমন ভাবে গোসল করতে হবে যাতে শরীরের কোন অঙ্গ শুকনো না থাকে। এ প্রসঙ্গে একাধিক হাদিস রয়েছে। সেসব হাদিস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন গোসল করতেন তখন তার শরীরের সব অংশ ভেজা থাকতো। (সুনানে আবু দাউদ : ২১৭)
যে ব্যক্তি পবিত্রতার উদ্দেশ্যে গোসল করে, তার পাপগুলো ঝরে যায় এবং ঝরে যাওয়া প্রতিটি পানির ফোঁটা ও কণা একেকটি নেকি রূপে গণ্য হয়। (আল হাদিস)
আরো: তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও নিয়ত
গোসলের সুন্নত কয়টি ?
গোসলের সুন্নত ছয়টি। যথা,
- ১. গোসল শুরুর আগে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পাঠ করা।
- ২. পবিত্রতা অর্জনের নিয়ত করা।
- ৩. দুই হাতের কব্জি ওজুর মত তিনবার পরিষ্কার করা।
- ৪. কাপড় অথবা শরীরের কোথাও অপবিত্র কোনো কিছু লেগে থাকলে, গোসলের আগে তা পরিষ্কার করা।
- ৫. গোসলের আগে ওযু করা। গোসলের স্থান নিচু হলে ও পানি জমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে টাখনুসহ দুই পা পরে পরিষ্কার করা।
- ৬. ডান দিকে তিনবার, বাম দিকে তিন বার ও মাথার ওপর তিনবার পানি প্রবাহিত করা।
গোসল কখন সুন্নত :
চারটি কারণে গোসল সুন্নত। কারণসমূহ হলো-
- ১.জুমার নামাজের আগে গোসল করা সুন্নত।
- ২. ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার নামাজের আগে গোসল করা সুন্নত।
- ৩. ইহরামের জন্য গোসল করা সুন্নত।
- ৪. হাজীদের আরাফায় অবস্থানের সময় গোসল করা সুন্নত।
গোসল ফরজ হওয়ার কারণ :
পাঁচটি কারণে গোসল ফরজ হয়। কারণগুলো হচ্ছে-
- ১. স্বামী-স্ত্রী সহবাস করলে কিংবা পুরুষের বীর্যপাত হলে।
- ২. নারীদের ঋতুস্রাব অথবা পিরিয়ড হলে।
- ৩. সন্তান প্রসবের পর রক্তপাত বন্ধ হলে।
- ৪. মৃত ব্যাক্তিকে গোসল দেওয়া জীবিতদের জন্য।
- ৫. কোনো অমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করলে।
রতিক্রিয়া, শুক্রপাত হওয়া (স্বপ্নে বা জাগরণে) এবং নারীদের ঋতুস্রাব ও প্রসবোত্তর স্রাব সমাপ্ত হওয়া। (ফাতাওয়া তাতারখানিয়া, প্রথম খন্ড, পৃষ্টা: ২৭৮)। গোসল ফরজ হওয়ার পর বিনা কারণে বিলম্ব করা উচিত নয়। একবার গোসল করার পর উপরিউক্ত কারণগুলো কোনো একটি সংঘটিত হওয়ার আগ পর্যন্ত গোসল ফরজ হবে না। তবে প্রতি শুক্রবার গোসল করা সুন্নাত, উভয় ঈদের দিনে গোসল করা সুন্নত এবং বিশেষ ইবাদতের জন্য গোসল করা মুস্তাহাব।