মদিনা পানির পাম্প এর দাম

1/5 - (1 vote)

মদিনা পানির পাম্প এর দাম

বাড়ি নিয়ে মহাঝামেলার মধ্যে আছেন শরীফ সাহেব। তিনি চাকরি করেন একটা সরকারী ব্যাংকে। লোন নিয়ে পাঁচতলা বাড়ি তৈরি করেছেন। দোতলায় নিজের পরিবার নিয়ে থাকেন শরীফ সাহেব। বাকি সব ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়েছেন। প্রতিমাসে যে টাকা ভাড়া পান তা মন্দ নয়। এভাবেই দিন ভালই কাটছিল তার। কিন্তু কিছুদিন ধরে বাড়ি নিয়ে নানা সমস্যায় তাকে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগে বাড়ির পানি তোলার পাম্পটি হঠাৎ করে নষ্ট হয়ে গেলে বাড়িজুড়ে কারবালা শুরু হয়ে যায়। পানির জন্য ভাড়াটিয়াদের হৈচৈ চেঁচামেচিতে মাথা খারাপ হওয়ার যোগাড় বাড়িওয়ালা শরীফ সাহেবের। তড়িঘড়ি করে নতুন আরেকটা পাম্প এনে লাগানো পর স্বস্তি নেমে আসে। খুব বেশিদিন হয়নি আগের পানির পাম্পটা লাগানো হয়েছিল। এত তাড়াতাড়ি ওটা নষ্ট হয়ে যাবে শরীফ সাহেব ভাবতে পারেননি।

পানির পাম্প এর দাম

শরীফ সাহেবের মতো অনেকেই তেমন সমস্যায় আছেন নিজের বাড়ি নিয়ে। আমাদের প্রাত্যহিক জীবনযাপনে পানির প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি। পানির অপর নাম জীবন- কথাটা সব সময় উচ্চারিত হয়। আমাদের সবার দৈনন্দিন জীবনধারায় পানির রয়েছে বহুমুখী ব্যবহার। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগমুহূর্ত পর্যন্ত প্রতিদিনই পানির প্রয়োজন। প্রাচীনকালে মানুষের ব্যবহৃত পানির প্রধান উৎস ছিল, নদী ও ঝরনা। সময়ের বিবর্তনে মানুষের পানি সংগ্রহ ব্যবস্থায় ঘটেছে। আমূল পরিবর্তন। কুয়া, টিউবওয়েলের ধারাবাহিকতায় পানি সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে বিদ্যুতচালিত পানির পাম্প। পাম্পের সাহায্যে মাটির গভীর স্তর থেকে খুব সহজে পানি তোলা যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তিও বদলে যাচ্ছে দ্রুত। মাটির গভীর থেকে আরও গভীরে পানি তোলার কাজে ব্যবহৃত হয় সাবমার্সেবল পানির পাম্প।

সাবমার্সেবল পানির পাম্প প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ ফুট নিচে স্থাপন করা হয়। এই পাম্প ব্যবহার করা হয় মূলত কৃষি ও ক্ষেতখামারের কাজে। পাম্পের কয়েলের ওপর নির্ভর করে পাম্পটির কাজ করার সামর্থ্য। বাজারে দু’ধরনের পানির পাম্প পাওয়া যায়। একটি হলো ক্ল্যাসিক পানির পাম্প, আরেকটি হলো সাবমার্সেবল পানির পাম্প। ক্ল্যাসিক পানির পাম্পগুলো বেশি ব্যবহৃত হয় বাসাবাড়িতে পানি তোলার কাজে। শহরাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে রয়েছে এ ধরনের পানির পাম্প। পানির পাম্প ছাড়া মাটির গভীর থেকে পানি তোলা কষ্টসাধ্য।

শুধু ঢাকা শহরের গৃহস্থালির দৈনন্দিন পানির চাহিদা মেটাতে বাজারে প্রচলিত পাম্পের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। একতলা থেকে পাঁচতলা বাড়ির জন্য প্রয়োজন এক ঘোড়া শক্তিসম্পন্ন পানির পাম্প। এক ঘোড়া পানির পাম্প পাঁচতলার ওপরে ঘণ্টায় ১০০০ লিটার পানি তুলতে পারে। সাত থেকে আটতলা বাড়ির জন্য প্রয়োজন দুই ঘোড়া পানির পাম্প। দুই ঘোড়া পানির পাম্প সাত থেকে আট তলার ওপরে ঘণ্টায় ১২০০ থেকে ১৫০০ লিটার লিটার পানি তুলতে পারে। ১০ থেকে ১২ তলা বাড়ির জন্য প্রয়োজন তিন ঘোড়া পানির পাম্প। তিন ঘোড়া পানির পাম্প ১০ থেকে ১২ তলার ওপরে ঘণ্টায় ১৮০০ থেকে ২০০০ লিটার পানি তুলতে পারে।

শিল্প কারখানার জন্য ছয় ঘোড়া শক্তির পানির পাম্প ব্যবহার করা হয়। ছয় ঘোড়া পানির পাম্প প্রতি ঘণ্টায় ১০ থেকে ১২ হাজার লিটার পানি উত্তোলন করতে পারে। বাজারে রয়েছে নানা ধরনের বিভিন্ন কোম্পানির পানির পাম্প। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য গাজী, এজি, পেডরোলো, আরএফএল, পারটেক্স প্রভৃতির কথা বলা যায়।

গাজী ১ ঘোড়া পাম্পের দাম কত

এই কোম্পানিগুলোর পানির পাম্প প্রায় সব ইলেক্টনিক সামগ্রীর দোকানে পাওয়া যায়। এগুলোর দাম ১৩,৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৭৫,০০০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে প্রতিটি পাম্পের রয়েছে দুই থেকে তিন বছরের ওয়ারেন্টি। এর মধ্যে কোন পাম্প জ্বলে গেলে কিংবা বড় কোন সমস্যা হলে পাম্প কেনার সময় দেয়া ওয়ারেন্টি কার্ড দেখিয়ে কোন রকম খরচ ছাড়া পাম্পটি সারিয়ে নেয়া যাবে। সবার আগে লক্ষ্য রাখতে হবে বিদ্যুত চলে যাওয়ার পর পাম্পের সুইচটি যেন অন করা না থাকে। সুইচ অন করা থাকলে হঠাৎ বিদ্যুত আসার পর ঝটকায় পাম্পটি বিকল হয়ে যেতে পারে। লাইনে পানি না থাকলেও পাম্প অনেক সময় জ্বলতে থাকে। এ অবস্থায় স্বাভাবিকভাবে পাম্পটি গরম হয়ে জ্বলে যেতে পারে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকাটাই উত্তম। আর পাম্প চলাকালীন সময়ে সঠিক মাত্রায় ভোল্টেজ সরবরাহের জন্য ভোল্টেজ ষ্টাবিলাইজার ব্যবহার করলেও আপনার পাম্পটি সুরক্ষিত থাকবে আরও বহুদিন।

পানির পাম্প বা মটরে পানি প্রবেশ করলে করণীয়

পানির পাম্প বা মটরে পানি ঢুকে যাওয়া একটা কমন সমস্যা। আমরা যারা পানির পাম্প ব্যবহার করছি প্রায় এই সমস্যাই পড়ি। বিভিন্ন কারণে পানি প্রবেশ করতে পারে। বন্যা বা বেশি বৃষ্টির কারণে বাসাবাড়িতে পানি উঠে গিয়ে এ ধরণের সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। পানি ঢুকার কারণে পাম্প বা মটরের কয়েল পুড়ে যাওয়ার মত ঘটনাও ঘটছে।

পাম্প বা মটরে যদি পানি ঢুকে যায় তাহলে দ্রুত বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে দিয়ে পাম্পটি একটি শুকনো জায়গায় রেখে একটি শুকনো কাপড় দিয়ে ভাল করে মুছে নিতে হবে। এরপর পাম্পটির ফ্যান কভার ও শেষ অংশের কভার খুলে সূর্যের আলোতে অথবা ইলেকট্রিক লাইটের আলোতে ৮/১০ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। পানি সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাওয়ার পর পুনরায় পাম্পটিতে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে চালানো যাবে।

পাম্প চালু থাকা অবস্থায় পানি ঢুকলে, পাম্পের কয়েল পুড়ে যেতে পারে। যার কারণে পাম্প থেকে পোড়া গন্ধ বের হতে পারে এবং কয়েলের তার পুড়ে কালো হয়ে যায়। পাম্পে পানি প্রবেশ করলে কয়েলের ইনসুলেশন নষ্ট হয়ে মটর ঘোরা বন্ধও হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও পানি প্রবেশের কারণে পাম্প এর বিয়ারিং জ্যাম হয়ে যায়, যার কারণেও পাম্প এর মটর ঘোরা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত আপনার নিকটস্থ লোকাল ইঞ্জিনিয়ার বা প্লাম্বার সাথে যোগাযোগ করে পাম্পটি সার্ভিস এর ব্যবস্থা নিতে হবে।

ড্রেনেজ পাম্পের মাধ্যমে পানির উত্তোলন বা স্থানান্তরের সময় পাম্প বন্ধ হয়ে গেলে করণীয়।

ড্রেনেজ পাম্পের মাধ্যমে পানির উত্তোলন বা স্থানান্তরের সময় পাম্প বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের করণীয় কি? সাধারণত, বিভিন্ন কন্সট্রাকসনের কাজে, পুকুর, নর্দমা বা ড্রেনের পানি উত্তোলন বা স্থানান্তরের জন্য ড্রেনেজ পাম্প ব্যবহার করা হয়। এই পাম্পটি দিয়ে সহজেই এক জায়গা থেকে পানি তুলে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা হয়।

ড্রেনেজ পাম্প চালানোর সময় ‘কমন সমস্যা’ হল শক্ত ময়লা বা আবর্জনা ড্রেনেজ পাম্পটির ভিতর আটকে গিয়ে, ইম্পেলার জ্যাম হয়ে যাওয়া এবং পাম্প হটাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়া। ইম্পেলার-এর কাজ হচ্ছে মূলত ঘূর্ণনের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করে এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা।

এ সমস্যার সহজ সমাধান হলো, ড্রেনেজ পাম্পটি বসানোর সময় ভূমি থেকে কমপক্ষে ৬ ইঞ্চি ওপরে স্থাপন করতে হবে এবং পাম্পটির মুখে একটি শক্ত জালি খাঁচা ব্যবহার করতে হবে যাতে শক্ত ময়লা বা আবর্জনা সহজে প্রবেশ করতে না পারে।

এছাড়া কোন কারণে যদি পানি উত্তোলনের সময় শক্ত ময়লা বা আবর্জনা ড্রেনেজ পাম্প এর ভিতরে আটকে গেলে, ইম্পেলার জ্যাম করে ফেলে যার কারণে যার কারণে মটর বন্ধ হয়ে যায় এবং মটর দীর্ঘক্ষণ না ঘোরার কারণে কয়েল জ্বলে যেতে পারে এবং ক্যাপাসিটর ও নষ্ট হতে পারে। এ ধরণের পরিস্থিতিতে দ্রুত আপনার নিকটস্থ লোকাল ইঞ্জিনিয়ার বা প্লাম্বার সাথে যোগাযোগ করে পাম্পটি সার্ভিস করতে হবে।

ইলেকট্রিক মটর বন্ধ হয়ে যাওয়া বা ঘূর্ণন গতি কমে যাওয়ার কারণ এবং করণীয়

সাধারণত কল-কারখানায়, ধান কাটা, খড় কাটা, মশলা ভাঙ্গা ইত্যাদি কাজে ইলেকট্রিক মটর ব্যবহৃত হয়। আমাদের দেশে তাঁত শিল্প সম্বলিত যে ধরণের কল-কারখানা আছে, সে সব জায়গায়তেই ইলেকট্রিক মটর ব্যবহৃত হয়।

ইলেকট্রিক মটর চালানোর সময় ‘কমন সমস্যা’ হল, মটরটি হটাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া বা ঘূর্ণন গতি কমে যাওয়া। মূলত ইলেকট্রিক মটরে ব্যবহৃত স্টারটিং ক্যাপাসিটর এবং রানিং ক্যাপাসিটর নষ্ট হওয়া বা এর ক্যাপাসিটি বা মান কমে যাওয়ার কারণে এ ধরণের সমস্যা দেখা যায়।

এই সমস্যা সমাধানে যাওয়ার আগে আমরা জেনে নেই যে, স্টারটিং ক্যাপাসিটর এবং রানিং ক্যাপাসিটর এর মুল কাজ কি। স্টারটিং ক্যাপাসিটর মূলত মটরকে চালু করার কাজে ব্যবহার করা হয় এবং রানিং ক্যাপাসিটর মটরের ঘূর্ণন গতিকে স্বাভাবিক রাখার কাজ করে।

ইলেকট্রিক মটর চালু করার পূর্বে, মেশিন অবশ্যই লোড বা বোঝা মুক্ত রাখতে হবে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায় যে, খড় কাটা মেশিনে খড় কাটার পর, অবশিষ্ট যে খড় মেশিনে থেকে যায় তা অবশ্যই মটর পুনরায় চালু করার আগে মেশিন থেকে বের করে ফেলতে হবে তা না হলে অধিক শক্তি ব্যয় হবে এবং অধিক লোডের কারণে স্টারটিং ক্যাপাসিটর নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণন গতি বাধাগ্রস্ত হয়ে রানিং ক্যাপাসিটরও নষ্ট হতে পারে, অনেক ক্ষেত্রে কয়েল পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।

এ ধরণের সমস্যা প্রতিরোধে, ইলেকট্রিক মটররের ক্যাপাসিটি অনুযায়ী লোড দিতে হবে এবং মটর চালু করার পর ২০-৩০ সেকেন্ড পরে মেশিনে লোড দিতে হবে। তাহলে ক্যাপাসিটর নষ্ট হওয়ার বা কয়েল পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবেনা।

যদি ইলেকট্রিক মটর একবারে বন্ধই হয়ে যায় বা মটরের ক্যাপাসিটি অনুযায়ী ঘূর্ণন গতি কমে যায় তাহলে দ্রুত আপনার নিকটস্থ লোকাল ইঞ্জিনিয়ার বা প্লাম্বার সাথে যোগাযোগ করে পাম্পটি সার্ভিসের ব্যবস্থা করতে হবে এবং প্রয়োজনে লোকাল ইঞ্জিনিয়ার এর পরামর্শ অনুযায়ী ক্যাপাসিটর পরিবর্তন করতে হবে।

পানির পাম্প এর দাম
মদিনা পানির পাম্প এর দাম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *