Info

১কেজি পেঁয়াজের দাম কত বাংলাদেশ

১কেজি পেঁয়াজের দাম কত বাংলাদেশ

4.5/5 - (2 votes)

১কেজি পেঁয়াজের দাম কত বাংলাদেশ

১কেজি পেঁয়াজের দাম কত বাংলাদেশ রোজার আভাস পেতেই অসহনীয় হয়ে উঠছে নিত্যপণ্যের দাম। হঠাৎ করেই রাজধানীর বাজারগুলোতে অস্বাভাবিক বেড়েছে পেঁয়াজের দাম, এক লাফে হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। দুই-তিন দিন আগেও যে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। বর্তমানে ২৫ টাকা বেড়ে তা দাঁড়িয়েছে ৬০ টাকায়। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। একই অবস্থা সারা দেশেই। যদিও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী দাবি করেন ২৫ টাকা দরেই বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। গত শুক্রবার রংপুর সার্কিট হাউস মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী যখন ২৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রির দাবি করেন; তখন তার সংবাদ সম্মেলনস্থল থেকে কয়েকগজ দূরে রংপুর সিটি করপোরেশন মার্কেটে ৫০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল। বাণিজ্যমন্ত্রী দাবি, পেঁয়াজের দাম এখন কমে গেছে। কৃষকরা দাম পাচ্ছেন না। প্রতি কেজি পেঁয়াজ উৎপাদনে কৃষকদের খরচ ১৮ থেকে ২০ টাকা। সেখানে বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়।

মোবাইল দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি

অথচ সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ২৫ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি করছেন ৬০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এই পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০-৩৫ টাকা। দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা বৃষ্টিকেই দায়ী করেন। তারা বলছেন, বৃষ্টির কারণে অনেক ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক পেঁয়াজ পচে গেছে।

রাজধানীর খুচরা বাজারে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ দিন প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩০-৩৫ টাকা। পাশাপাশি প্রতিকেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ৪০ টাকা ছিল। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক দ্রব্যমূল্য তালিকা অনুযায়ী, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৫০ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি দরে।

Google News Flow Now

রাজধানীর কাওরান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা সোনাই আলী বলেন, পাইকারি বাজারে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। যে কারণে বেশি দামে এনে বাড়তি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। কিন্তু পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই। এ বাজারের ক্রেতা শাকিল বলেন, একে একে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। শুধু পেঁয়াজ বাকি ছিল, রমজানের আগে সেটিরও দাম বাড়ানো হয়েছে। রাজধানীর সর্ববৃহৎ পাইকারি আড়ত শ্যাম বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী শংকর চন্দ্র ঘোষ বলেন, কয়েকদিন আগে হঠাৎ বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে এখন দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমায় আমদানি করা পেঁয়াজের চাহিদা বেড়েছে, ফলে দাম বেড়েছে।

চট্টগ্রাম নগরীতে পেঁয়াজের দাম প্রতিকেজিতে মানভেদে ১২ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। দেশি পেঁয়াজ চারদিন আগে পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছিল ২৮ টাকা থেকে ৩০ টাকা, যা এখন ৩৮ থেকে ৪০ টাকা। আর খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা থেকে ৫২ টাকা কেজি দরে। চারদিন আগে পাইকারি বাজারে ভারতীয় ভালোমানের পেঁয়াজ দাম ছিল ৩৩ টাকা থেকে ৩৫ টাকা, যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৭ টাকা। আর খুচরা বাজারে ভালোমানের ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকায়। গত সপ্তাহে পাইকারি বাজারে মিয়ানমারের পেঁয়াজের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৩০ টাকার মতো।

পাইকারি বাজারে এখন মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা দামে। আর খুচরা পর্যায়ে মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা। খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের বৃহত্তর পাইকারি মার্কেট হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস বলেন, দেশি পেঁয়াজের দাম প্রতিকেজিতে প্রায় ১৫ টাকার বেশি বেড়েছে। ভারতীয় ভালোমানের পেঁয়াজের দামও কেজিপ্রতি ১০ টাকার বেশি বেড়েছে। ভারতীয় রফতানিকারক, ব্যবসায়ী ও মজুদদাররা সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে পেঁয়াজের তেমন সংকট নেই।

এছাড়া হিলি বাজারে তিন দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি মানভেদে ১০ টাকা বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম। সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ কিনতে আসা রায়হান কবির জানান, প্রায়ই নিত্যপণ্যটির দাম বাড়ছে। এতে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। তিনি নিয়মিত বাজার তদারকির দাবি জানান। হিলি বাজারের ব্যবসায়ী শাকিল মাহমুদ জানান, দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ ও ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি কম। সেই জন্য দাম বেড়েছে। সরবরাহ বৃদ্ধি হলে আবারও দাম কমতে পারে।

একই চিত্র জামালপুরেও। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ। জামালপুরে মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যেখানে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হতো ৩০ টাকা। গতকাল সেটির দাম হয়েছে ৬০ টাকা।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ড. জায়েদ বখত বলেন, করোনা মহামারিতে মানুষের আয় কমেছে, অন্যদিকে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। এতে সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়ে সীমিত আয়ের মানুষজন। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত মনিটরিংয়ের পাশাপাশি মুনাফাখোরদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান থাকা জরুরি।

সরকারি ছুটির তালিকা ২০২৩ 

সিন্ডিকেটের কারসাজি থামছে না। সরবরাহ প্রচুর থাকলেও মোকামে ঘাটতি কথা বলে এই চক্র দেশি পেঁয়াজ পাইকারি ও খুচরা বাজারে কেজিতে ৫ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই মৌসুমেও ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আসছে না পেঁয়াজের দাম। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, কয়েকদিন পর পর পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাওয়া অযৌক্তিক। একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছে।

জানতে চাইলে কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, ‘কয়েকদিন পর পর পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাওয়া অযৌক্তিক। গত বছর ব্যবসায়ীদের অজুহাত ছিল বাজারে দেশি পেঁয়াজের সংকট। তারা আমদানি করা পেঁয়াজ অতিরিক্ত দামে বিক্রি করে অতি মুনাফা করে নেয়। এখন দেখা যাচ্ছে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসার পরও দাম তেমন কমছে না। এর মধ্যে আবার দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম কমাতে উৎপাদন ও সংরক্ষণে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা দরকার। এজন্য কৃষককে প্রযুক্তিগত সুবিধা ও স্বল্প মূল্যে ঋণ সহায়তা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া কৃষকদের উন্নতমানের বীজ ও সার সরবরাহ করা গেলে পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা যাবে। এতে বাজারে পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল হবে।’

বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওরান বাজার, হাতিরপুল বাজার, শান্তিনগর কাঁচাবাজার ও মালিবাগ বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে একই দাম ছিল। অন্যদিকে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ৫০ টাকা ছিল। এদিকে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবেও পেঁয়াজের বাজার এখনও চড়া। সেখানে গত বছর একই সময় দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ২২ থেকে ২৮ টাকা। আর বৃহস্পতিবার এই পেঁয়াজের মূল্য দেখা গেছে ৪০ থেকে ৫৫ টাকা। সেক্ষেত্রে বছর ব্যবধানে দাম ৯০ শতাংশ বেশি। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম গত বছর এই সময়ে ছিল ২০ থেকে ২৪ টাকা। বৃহস্পতিবার বাজারমূল্য দেয়া আছে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা। সেক্ষেত্রেও দেখা গেছে বছরের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ১২৭ শতাংশ।

কারওয়ান বাজারের খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. সোনাই আলী যুগান্তরকে বলেন, ‘এখন দেশে পেঁয়াজের ভরা মৌসুম। দাম কিছুটা কমেছে। তবে যে অনুপাতে দাম কমার কথা ছিল সে রকম কমেনি। এর মধ্যে আবার পাইকারি ব্যবসায়ীরা দেশি পেঁয়াজের ঘাটতির কথা বলে ৫ টাকা বাড়িয়েছে। তাই বেশি দামে কিনে আমাদের মতো খুচরা বিক্রেতাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাই দাম বাড়ার পেছনে খুচরা বিক্রেতাদের কোনো হাত নেই।’

১কেজি পেঁয়াজের দাম কত বাংলাদেশ
১কেজি পেঁয়াজের দাম কত বাংলাদেশ

তিনি বলেন, ‘পাইকারি বিক্রেতারা দাম বাড়ালে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। তবে মনে হচ্ছে কিছুদিনের মধ্যে পেঁয়াজের দাম পুরোপুরি সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে।’

হাতিরপুল কাঁচাবাজারের খুচরা বিক্রেতা আমানউল্লাহ বলেন, ‘পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছে বলেই আমরা দাম বাড়িয়েছি। ৪২ টাকায় বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজ ৪৬ থেকে ৪৮ টাকায় কিনতে হচ্ছে।’

একই বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা রোকনুজ্জামান বলেন, ‘পেঁয়াজের দামের কথা আর কী বলব। গত বছর থেকেই এ পণ্যটি কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখন পেঁয়াজের মৌসুম। ভেবেছিলাম নতুন বছরে দাম ক্রয়ক্ষমতায় আসবে। কিন্তু আসেনি। জানি না কবে নাগাদ কম দামে পেঁয়াজ কিনতে পারব।’

019 kon sim

এদিকে পুরান ঢাকার শ্যামবাজার ও কারওয়ান বাজারের পাইকারি পেঁয়াজের আড়ত ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাইকারি দরে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম না বাড়লেও দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। সেক্ষেত্রে দেশি পেঁয়াজ প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা, যা কেজিতে দাম হয় ৪৮ টাকা। এই পেঁয়াজ গত সপ্তাহে ৪২ থেকে ৪৩ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আড়তে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম আগের দামেই প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা, যা কেজিতে দাম পড়ে ৪৪ টাকা। কারওরান বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা আবদুল মালিক বলেন, ‘গত সপ্তাহ থেকে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কমতির দিকে। তবে মোকামে দেশি পেঁয়াজের ঘাটতি দেখা দেয়ায় পাইকারিতে কিছুটা দাম বেড়েছে। কিন্তু আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহ ঠিক থাকায় গত সপ্তাহে যে দামে বিক্রি হচ্ছিল সেই একই দামে বিক্রি হচ্ছে।’

আজকের পেঁয়াজের দাম কত,
আজ পেঁয়াজের দাম কত,
ভারতে পেঁয়াজের দাম কত,
পিয়াজ কত টাকা কেজি,
পেঁয়াজের দাম কত বর্তমানে,
কলকাতা পেঁয়াজের দাম কত,
পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি,

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button